Saturday, October 6, 2018




সূচিপত্র                                         পৃষ্ঠা নং
ভূমিকা……………………………………………………………………………. 1
রাজনৈতিক সামাজিকীরনের সঙ্গা………………………………………………..1-2
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের বৈশিষ্ট্য…………………………………………..2-3
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রকারভেদ……………………………………….3-4
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যম……………………………………………4-11
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের ক্রিয়াকলাপ…………………………………….11-12
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের গুরুত্ব…………………………………………….12
উপসংহার……………………………………………………………………………12-13
তথ্যসূত্র……………………………………………………………………………….13













 ভুমিকাঃ মানুষ যখন পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করে তখন দৈনিক চাহিদা যেমন ক্ষুদা, তৃষ্না ব্যতীত আর কোন কিছু উপলব্দি করতে পারে না কারন অন্য কোন জিনিসের জ্ঞান তার ভেতর তখনো সঞ্চারিত হয় না। কিন্তু আস্তে আস্তে তার ভেতর জ্ঞানের সঞ্চার ঘটতে থাকে কারন সে সমাজ  এবং সমাজের পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে জানতে শুরু করে এবং সমাজের আচার, আচারন, মুল্যবোধ, রীতি নীতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করে, সামাজিক প্রভাবের এ ধারাকে বলা হয় সামাজিকীকরন। ব্যক্তি তার সামগ্রিক জীবনব্যাপী যে সামাজিকীকরন ঘটায় তার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল রাজনৈতিক সামাজিকীকরন। একটি মানুষ যখন ছোট থেকে সমাজে বসবাস করে তখন থেকেই সমাজ সর্ম্পকে তার ধারনা বিকশিত হয়। এ সময় সে বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনার সম্মুখীন হয় এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা সমর্পকে তার ভেতর ধারনা বিকশিত হতে থাকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং কাঠামো সম্পর্কে যে ধারনা তাকেই রাজনৈতিক সামাজিকীকরন বলে। মানুষ সামাজিক এবং রাজনৈতিক উভয় জীব বিধায় সামাজিক আচারনের পাশাপাশি রাজনৈতিক সম্পর্কেও তার সম্যক ধারনা থাকতে হবে। মানুষ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রাজনীতির বিষয়বস্তু সম্পর্কে যে অবহিত হবে, তাকেই রাজরৈতিক সামাজিকীকরন বলে। রাজনৈতিক সৃষ্টি সম্পর্কে জানার প্রক্রিয়াই রাজনৈতিক সামাজিকীকরন।
আলমন্ড বলেন, ‘’রাজনৈতিক কৃষ্টির অনুপ্রবেশ ঘটানোর ব্যবস্থাবলিই হলো রাজনৈতিক সামাজিকীকরন’’
রাজনৈতিক সামাজিকীকরন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির ভেতর সেতুবন্ধনরুপে কাজ করে।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরন হল একটি পদ্ধতি যার দ্বারা ব্যক্তি অর্জন করে মনোভাব, অভ্যাস, মূল্যবোধ যেগুলো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহনের জন্য প্রযোজ্য।
Political socialization is the means by which individuals acquire motives, habits and values relevant to participation in a political system.
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের সঙ্গাঃ
রাজনৈতিক সামাজিকীকরন সম্পর্কে জানতে হলে আগে সামাজিকীকরন সম্পর্কে জানতে হবে। কারন রাজনৈতিক সামাজিকীকরন হলো সামাজিকীকরনের একটি অংশ।
সামাজিকীকরনঃ জন্মের পর মানব শিশু প্রথমে মায়ের এবং পরবর্তী সময়ে অন্যান্য সদস্যের সংস্পর্শে আসে। পরিবারের সকল সদস্যের আচারন শিশুর আচরনকে প্রভাবিত করে ক্রমে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তার মধ্যে নানা প্রকার পরিবর্তন আসতে থাকে। শিশু যে সমাজে বেড়ে ওঠে সে সমাজের প্রভাব তার উপর  অবশ্যই নিপাতিত হয় যেমন খেলার সাথি পাড়া-প্রতিবেশি,  বিদ্যালয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। শিশু যে সমাজে বড় হচ্ছে সে সমাজের প্রথা মূল্যবোধ রীতি-নীতি আচার-আচারন প্রভৃতি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করে সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে শেখে এবং সামাজিক মানুষে পরিনত হয়। সুতরাং যে প্রক্রিয়ায় শিশু ক্রমশ সামাজিক মানুষে পরিনত হয় তাকে সামাজিকীকরন বলে। সামাজিকীকরন একটি জীবনব্যপি প্রক্রিয়া।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনঃ ব্যাক্তির সামাজিকীকরন একটি দিক হলো রাজনৈতিক সামাজিকীরন, সামাজিক জীব হিসেবে শিশু  সমাজে বসবাসের সময় সমাজ সম্পর্কে তার জ্ঞান প্রসারিত হয়। এ সময়ে রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারনা লাভ করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও কাঠামো সম্পর্কে যে ধারনা তাকেই রাজনৈতিক সামাজিকীকরন বলে। মানুষ একই সাথে সামাজিক ও রাজরৈতিক জীব, সে জন্য তাকে রাজনীতি সম্পর্কে জানতে হয়। রাজনীতি বিষয়ে অবস্থিত হওয়ার এই প্রক্রিয়ই রাজনৈতিক সামাজিকীকরন এর মাধ্যমে সম্প্রদয়ের সাধারন দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্তির মধ্যে স্থায়ী হয়ে সামাজিক আদর্শ ও মূল্যবোধের দীক্ষা এবং তাতে সুষ্পষ্ট রাজনৈতিক ধারনার জন্ম দেয়। সামাজিকীকরনের মতো রাজনৈতিক সামাজিকীকরন একটি শিক্ষণ প্রক্রিয়া যা মানুষের সমগ্র জীবনব্যাপি চলতে থাকে। রাজনৈতিক আচরন ও রাজনৈতিক কর্মপদ্ধতি এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে অবলম্বিত সকল প্রকার কৌশল রাজনৈতিক দীক্ষাকে প্রভাবিত করে। রাজনৈতিক সচেতনতার জন্য রাজনৈতিক সামাজিকীকরন আবশ্যক।
বিভিন্ন রাষ্ট্রচিন্তাবীদগনের রাজনৈতিক সামাজিকীকরন সম্পর্কে মতবাদঃ
রাজনৈতিক সামাজিকীকরন এমন একটি পদ্ধতি যার দ্বারা ব্যক্তি অর্জন করে মনোভাব, অভ্যাস,মূল্যবোধ যেগুলো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহনের জন্য প্রযোজ্য।
রাজনৈতিক কৃষ্টির অনুপ্রবেশ ঘটানোর ব্যবস্থাবলীই হলো রাজনৈতিক সামাকীকরন।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের বৈশিষ্টঃ রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমে শিশুর প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার পথে রাজনৈতিক মূল্যবোধ ও মনোবৃত্তি জাগরিত করা যায় এবং প্রাপ্তবয়ষ্কদের বিভিন্ন রাজনৈতিক উপাত্তের উপযোগী করে গড়ে তোলা যায়। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের ধারনা বিচার বিশ্লেষন করলে এ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার কতগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
১। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রকৃতি ও প্রভাব নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় সময় ও পরিবেশ অনুযায়ী। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের সহায়ক পরিবেশ হলো সমরুপ ও নমনীয় পরিবেশ।
২। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের বিভিন্ন ধরনের মাধ্যম বিদ্যামান। এ মাধ্যমগুলোর মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক পরিপুরক হওয়া প্রয়োজন। কেননা রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমগুলো যদি পরষ্পরের পরিপুরক হয় তাহলে বিদ্যামান রাজনৈতিক ব্যবস্থার দায়িক্ত নিরাপদ হবে।
৩। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমগুলোর প্রকৃতি রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রকৃতির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থা যদি স্থায়ী ও সুদুঢ় হয় তাহলে রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমগুলো আরও শক্তিশালী হয়।
৪। রাজনৈতিক সামাজিকীকরন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ প্রতিষ্ঠানিক প্রভাব, বয়স ও অভিজ্ঞতার প্রভাব অর্থসামাজিক অবস্থান ও মনোভাবগত পার্থক্যের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
৫। রাজনৈতিক সামাজিকীকরন হলো সমগ্র জীবনব্যাপী অব্যাহত একটি প্রক্রিয়া যা বয়োসবৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে বিকশিত হয়ে এক সময়ে পূর্নতা লাভ করে। এবং সেই অনুসারে ব্যক্তির রাজনৈতিক সামাজিকীকরন অধিকতর সুদৃঢ়, শক্তিশালী ও উপযোগী হয়ে ওঠে।

রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রকারভেদঃ রাজনৈতিক সামাজিকীকরন সর্বদা অভিন্ন প্রকৃতির হয়না । অর্থাৎ রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রক্রিয়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রকারভেদ নিয়ে যথেষ্ট মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
১। ব্যক্ত ও অব্যক্তঃ রাজনৈতিক সামাজিকীকরন ব্যক্ত ও অব্যক্ত দুই ধরনের হতে পারে। মানুষ যখন রাজনৈতিক বিষয়ে প্রকাশ্য জ্ঞান লাভ করে তখন তাকে ব্যক্ত সামাজিকীকরন বলে। যেমন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্রিয়া-কলাপ আলোচনা সভা প্রচারনা ভোটদান ইত্যাদি ব্যক্ত সামাজিকীকরন অন্যদিকে অব্যক্ত সামাজিকীকরন বলতে বোঝায় কোন মানুষের মধ্যে যা গোপনে বা অলক্ষে প্রবেশ করে। সাধারনত এই প্রকার সামাজিকীকরন পরিবার থেকে উদ্ধত হয়ে তা ক্রমান্বয়ে বিকাশিত হয়ে এক সময় পুর্নতা লাভ করে।
২। নির্দিষ্ট ও ব্যপ্তঃ যখন কোন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান কোন নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সামাজিকীকরনকে প্রভাবিত করে তখন তাকে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সামাজিকীকরন বলা হয়। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ডগুলো বিদ্যামান। অপরদিকে যখন কোন বিশেষ কাঠামো বা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ক্ষেত্রকে একই সাথে প্রভাবিত করে তখন তাকে ব্যপ্ত সামাজিকীকরন বলা হয়। যেমন শিশু পরিবার থেকে একদিকের জ্ঞান নয় বরং সে রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে।
৩। নির্দিষ্ট ভিত্তিক ও বিশ্বজনীনঃ মানুষ যখন তার নিজস্ব পরিবার, বংশ ও সম্প্রদয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে তখন তা হয় নির্দিষ্ট ভিত্তিক সামাজিকীকরন। এর পরিধি অত্যন্ত ক্ষুদ্র । আবার যখন এই নির্দিষ্ট ভিত্তিক সামাজিকীকরনের সঙ্গে যখন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা কাঠামো যুক্ত হয় তখন তা হয় বিশ্বজনীন রাজনৈতিক সামাজিকীকরন । এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির প্রথমিক কাঠমোর সঙ্গে রাজনৈতিক কাঠামো যুক্ত হয়ে সামাজিকীকরনের পরিধির বিস্তার ঘটায়।
৪। প্রভাব বিস্তারকারী ও উপায়মূলকঃ ব্যক্তি যখন তার নিজ রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও কাঠামো হইতে উত্তম জ্ঞান লাভ করে যা বিরাজমান অন্যান্য ব্যবস্থা থেকে অধিক কার্যকার তখন তাকে প্রভাব বিস্তারকারী রাজনৈতিক সামাজিকীকরন বলে। আবার রাজনৈতিক বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি উপায় বা পন্থা হিসাবে কাজ করে তাকে উপায় মূলক রাজনৈতিক সামাজিকীকরন বলা হয়। পশ্চিমা দেশগুলোতে এই সামাজিকীকরনের বিশেষ প্রভাব লক্ষ করা যায়।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমঃ রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের কিছু বাহন আছে যাতে এটি বাস্তব রুপ লাভ করে।
১।পরিবারঃ পরিবার হলো মানব জীবনের প্রাথমিক শিক্ষায়তন। সামাজিকে ও রাজনৈতিক জ্ঞান মানুষের পরিবার থেকেই প্রাপ্ত হয়। পরিবারের কর্তা ব্যক্তির অনুকরনে শিশুর মধ্যে ক্রমে ক্রমে রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার অনুপ্রবেশ ঘটে। পুরাকালে পুত্র সন্তানের পিতার আদর্শে গড়ে তোলার জন্য আপ্রান চেষ্টা করা হত। সে ক্ষেত্রে মূলত আদর্শ ছিল যেমন পিতা তেমনি ছেলে (Like father like son)যে পরিবারের পিতা মাতা রাজনৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন সে পরিবারের সন্তানগন ও রাজনৈতিকভাবে অধিক সচেতন। অনেক পিতা মাতা ছেলেমেয়েদের সাথে সেচ্ছায় ও সচেতনতার সাথে রাজনৈতিক বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা করে। জাতীয় রাজনৈতিক সম্পর্কে পরিবার থেকেই জ্ঞান লাভ করে । উন্নত দেশ গুলোতে পারিবারিক আলোচনার মধ্যে রাজনৈতি ও বিশেষ স্থান পায়। আমেরিকাতে পিতা-মাতা ছেলেমেয়েদের মধ্যেই প্রথম থেকেই রাজনৈতিক শিক্ষা দেয়। পরিবার হল প্রথম ধাপ। পরিবারে প্রধান একজন সরকার সদস্য। পিতা মাতার আদর্শ অবশ্যই সন্তানের মধ্যে প্রতিফলিত হয়। শিশুকালে যে শিক্ষা পাওয়া যায় তা জীবনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
আমেরিকাও যুক্তরাষ্ট্রে  ৮০% ছেলেমেয়ে পিতা-মাতা অনুকরন করে। এ ক্ষেত্রে মাতার ভূমিকা সবচাইতে বেশি। নেপোলিয়ান বলেছিলেন, একটি দেশের পুনরুজ্জীবনের জন্য বেশি কিছুর দরকার হয় না, কেবলমাত্র দরকার হয় সুমাত্রার। পিতার ভূমিকাকে ও নগন্য ভাবা যায় না। জর্জ হার্বাটের কথায়  একজন  পিতা ১০০ স্কুলশিক্ষকের  চেয়ে উত্তম। তাই সামাজিকীকরন ও রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে অধিক।
২। বিদ্যালয়ঃ পরিবারের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বাহন হল স্কুল বা বিদ্যালয়, যেখানে শিশুর মধ্যে রাজনৈতিক দীক্ষার বীজ অঙ্কুরিত হয়।লেখা পড়ার সাথে সাথে ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষক মহোদয়ের আচারনকে বিশ্লেষন, মিটিং, মিছিল ইত্যাদি দেশের প্রচালিত রাজনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও সচ্ছ জ্ঞান অর্জন করতে পারে। ইস্টন ও হেস বলেছেন, “ শিশু যখন প্রাথমিক পর্যায়য়ে শিক্ষা সমাপ্ত করে, তখন সম্প্রদায় ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও সচ্ছ জ্ঞান অর্জন করতে পারে যা রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে বিশেষ সহায়ক হয়।
যেমন, পৌরবিজ্ঞান, রাজনৈতিক দল, জনমত ইত্যাদি। ছাত্র আন্দোলন, ভোটদান প্রকিৃয়া, ক্লাসের বন্ধুদের সাথে আলোচনা ইত্যাদির প্রভাবে রাজনৈতিক দিকে সচেতন হয়ে ওঠে। গান্ধির কথায়, বিদ্যালয় হচ্ছে চরিত্র গঠনের সাধনাগার। এখানে শিশুর সামগ্রিক চরিত্রের বিকাশ সাধিত হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের গুরু দায়িক্ত পালন করে। অনেকে বিদ্যালয়কে পরিবার থেকে গুরুত্বপুর্ন মনে করেছেন, কারন বিদ্যালয় জ্ঞান বিকাশের সাথে সাথে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও পরিপুক্ত হয়।
৩। ধর্মঃ ধর্ম ও ধর্মীয়  প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। ধর্ম পালনের জন্য মানুষ মসজিদ, মন্দির বা গির্জায় যায় কিন্তু শেখানে শুধু ধর্মই আলোচনা হয় না ধর্মের প্রেক্ষাপট প্রচালিত রাজনৈতিক ও আলোচনা হয়।
ধর্মগত বিশ্বাস রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের সহায়ক হয়। পশ্চিমাবিশ্বে বা উন্নত দেশে ধর্মের স্থান না থাকলেও অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে এর গুরুত্ব কম নয়।Francis Brown এর মতে, ধর্ম শুধু ব্যক্তিগত নয় একটি সামাজিক বিষয়ও বটে। জে. এ. ক্লার্কের মতে ধর্ম হচ্ছে জীবন ব্যাবস্থা। এমনিভাবে আলোচনা করে দেখা যায় ধর্ম ও রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে অর্থবহ ভূমিকা পালন করে।
৪। সঙ্গিদলঃ রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে সঙ্গিদল ও খেলার সাথীদের ভূমিকা কম নয়। বন্ধু বান্ধবের সাথে মেলামেশায় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অনুপ্রানিত করে এই মেলামেশার সহচবৃন্দের আচারন ও রাজনৈতিক আলোচনায় তারা দারুনভাবে প্রভাবিত হয়। Langton এর ভাষায়, সঙ্গিদের প্রধান কাজ হলো সামাজিক কৃষ্টির অনুপ্রবেশ ঘটানো।
যেন সে রাষ্ট্রের একজন সভ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। যে সব ছেলে মেয়েদের খেলাধুলা বা সাথীদের সাথে মেলামেশা সময় হয় না তারা তুলনামূলক ভাবে রাজনৈতিকভাবে অসচেতন হয়। ডনকুইকসেটের কথায়,কার ঘরে জন্মালো সেটা বড়কথা নয় কার সাথে ওঠা বসা করে এটাই বড় কথা। এজন্য Chapman বলেন, পরিবার এবং স্কুল রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের তাৎপয হলে ও সঙ্গিদের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।
৫। বিবাহঃ বিবাহ মানব জীবনের একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়। বিবাহের পর মানুষ নতুন জীবনে প্রবেশ করে। এর পর জীবনের ব্যাপক পরিবর্তন সুচিত হয়। স্বামী-স্ত্রী অত্যন্ত হ্দয়ের কাছাকাছি থেকে একআত্নার সাথে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সমস্যার উদ্ভব হলে পরামর্শক্রমে তা স্তির করে।
দুজনের আলোচনা সবসময় ফলপ্রসূ হয়। স্বামীর প্রভাবে স্ত্রী রাজনৈতিক জ্ঞান আহরোন করতে পারে।
উন্নত দেশে স্বামী-স্ত্রী সমভাবে রাজনৈতিক জ্ঞান আহরোন করতে পারে। অনুন্নত দেশ সমূহে নারী সমাজ তত উন্নত নয়। তাই তারা স্বমীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এবং অনুকরন করে থাকে।
৬। পাড়াপ্রতিবেশীঃ রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের আরেকটি বাহন হল পাড়াপ্রতিবেশি। পরিবারের সদস্য ও খেলার সাথীদের সহযোগিতায় শিশু প্রতিবেশীর সাথে পরিচিত হয়।এবং তাদের সাথে মেলামেশার সুযোগ করে নেয়।
তাদের জীবন পদ্ধতি আচার, আচারন, ও নীতি বিজ্ঞান শিশুকে ভয়ানক প্রভাবিত করে। কোন সময় রাজনৈতিক ধারনার সাথে একাত্ব বা দীমত পোষন করতে পারে। এমনিভাবে সংস্পর্শে আশায় রাজনৈতিক বিকাশ ঘটে ।
৭। সভা সমিতিঃ সভা, সমাবেশ মিছিল রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালণ করে।সাধারন মানুষ নিরক্ষরতাহেতু বই ও খবরের কাগজ পাঠে দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে না কিন্তু ‍নিয়মিত সভা সমিতিতে অংশগ্রহনের মাধ্যমে রাজনৈতিক জ্ঞান লাভ করতে পারে।
মিটিং, মিছিলে জনগনের, অংশগ্রহন নীরবতা সোচ্চার কন্ঠ প্রতিবাদ ধ্বনি ইত্যাদি মানুষের রাজনৈতিক চিন্তাধারায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে। তাই বলা যায় যে,রাজরৈতিক সামাজিকীকরনে সভা সমিতির ভূমিকা কম অর্থবহ নয়।
৮। বইপত্রঃ পৃথিবীর জ্ঞানী গুনী চিন্তাশীল ব্যক্তিদের ধ্যান-ধারনা বই-পত্রে প্রকাশিত হয়। বই পত্র পাঠ না করলে মানুষ প্রকৃত জ্ঞানে সমৃদ্ধশালী হতে পারে না। এসব পাঠে বিভিন্ন মুখী জ্ঞান সঞ্চায় করতে পারে। বই পত্র পাঠ না করলে নিজ দেশ এবং অণ্য দেশ সম্পর্কে কিছু জানা যায় না।
মরা রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের যে কোন বিষয় আলোচনা করছি কিন্তু প্রথমে কতিপয় বিজ্ঞানী তাদের চিন্তা চেতনা বই পত্রে প্রকাশ করেন। দেশের রাজরৈতিক প্রক্রিয়া ইত্যাদি পাঠে মানুষ রাজনৈতিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে আর এতে রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রক্রিয়া ত্বরানিত করে ।
৯। গনমাধ্যমঃ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর নিকট সংবাদ, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির বিষয়বস্তুর বিশেষ ধ্যান-ধারনা বিনোদন প্রভিতি পরিবেশন করার মাধ্যমই হল গনমাধ্যম। অধুনিক যুগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে গনমাধ্যমকে কেন্দ্র করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্র, বেতার,চলচিত্র,টেলিভিশন প্রভৃতি ।
 ডাওসন ও প্রেউইট এর মতে, গনসংযোগ মাধ্যমগুলো রাজনৈতিক দীক্ষায় গুরুত্বপুর্ন। ফলে জনগন সুস্পস্ট রাজনৈতিক ধারনা লাভ করতে পারে। এমন কি নিরক্ষর ব্যক্তি ও দর্শন ও শ্রবনের দ্বারা চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে সুচিন্ত্রিত ধারনা লাভ করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে গনমাধ্যমগুলোকে অবশ্যই মুক্ত ও অভাধ হতে হবে।
১০। রাজনৈতিকদলঃ আধুনিক গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক জ্ঞান ও মূল্যবোধ প্রচার করে। রাজনৈতিক দল গুলোর মাধ্যমে সরকার ও জনগনের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়।
অর্থাৎ রাজনৈতিক দল গুলোর মাধ্যমে সরর ও জনগনের একদিকে যেমন দেশের সব প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগনের চলমান কর্মকান্ডগুলো সম্পর্কে ধারনা নিতে পারে তেমনি অপরদিকে রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জনগনের সমস্যাগুলো সরকারের দৃষ্টিগোচর হয় এবং সরকার তা সমাধানের চেষ্টা চালায়। মূলত রাজনৈতিক দলের কাযক্রমের মাধ্যমেই জনগন অধিক সচেতন হয়ে ওঠে এবং রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমেই সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে।
১১। প্রতীকঃ প্রতীকগুলো রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে কাযকর ভুমিকা পালন করে। সাধারনত যে মাধ্যমের দ্বারা একটি দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ন কর্মকান্ড ও বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি আমাদের সামনে প্রতিফলিত হয় সেটাই মূলত প্রতীকী মাধ্যম হিসাবে পরিচিত।
যেমন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাবলি, ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এর ব্যক্তিত্ত্ব অন্যতম। এছাড়াও আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের তাৎপযপূর্ন ঘটনাবলির স্মৃতিস্মরনে পালিত বিভিন্ন দিবস, বিজয় দিবস অন্যতম। এই দিনগুলির উদযাপন তরুনদের মধ্যে একটি নতুন আত্মা সৃষ্টি করে এবং মানুষ আবার জাতীয় কারনের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে সর্বদা সচেষ্ট হয়।

রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের ক্রিয়াকলাপঃ
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রধান কর্ম হল, এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের রাজনৈতিক মূল্যবোধের সংক্রমন করা মানুষ জন্মের পর থেকে একটি শিশু সামাজিকীকরনের থেকে বেড়ে ওঠে। পরবর্তীতে একটি শিশু বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয় তার মধ্যে একটি হলো রাজনৈতিক। আর এই রাজনৈতিক কাঠামো  গুলো কিভাবে সুন্দর ভাবে উদযাপন করা যায় তার জন্য প্রয়োজন হলো সামাজিকীকরন আর সামাজিকীকরন থেকে রাজনৈতিক মূল্যবোধের সংক্রমন। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের আকৃতি একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতিঃ আমাদের প্রত্যহ জীবনে সবাই জাতির একটা আকৃতি থাকে যেমন মানুষের এক আকৃতি বিভিন্ন প্রজাতির প্রানী ভিবিন্ন আকৃতি আর এই আকৃতিদুটাই তার সংস্কৃতি দিকে ধাবিত হয়, আর এই আকৃতি থেকেই পরবর্তী একটা প্রজন্ম রাজনৈতিক এর সংস্কৃতিতে পরিনত হয়।যেমন পরিবারে আব্বু যদি রাজনৈতিক তাহলে তার পুত্রও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যুক্ত হবে, আর এই যুক্ত হওয়াটাই সামাজিকীকরন।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরন ব্যক্তির মনের মধ্যে মান, নিয়ম, এবং অভিযোজন উদযাপিত করে। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মধ্যে দিয়ে ও ব্যক্তির মনের মধ্যেও পরিবর্তন আসে। আমরা যদি একটি রাজনৈতিক দলের কথা বলি তারা তাদের উচ্ছবর্গের মানুষ গুলো যখন ভাল কাজ কর্মের দিকে ধাবিত করার জন্য উৎসাহিত করে তাহলে ঐ সংগঠনের সদস্য গুলো ভাল কাজের দিকে মানুষ কে উৎসাহিত করবে।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের প্রক্রিয়াটি সারাজীবন চলছে। পৃথিবীর সৃষ্টির উষাকাললগ্ন থেকে পৃথিবীর প্রকৃয়াটি যেমন পরিবর্তনশীল হয়ে আস্তে আস্তে অন্যরুপ ধারন করছে। আর এমনি রাজনৈতিক সামাজিকীকরন ও প্রক্রিয়াটি সারাজীবন চলবে সময়ের পেক্ষাপটে।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরন রাজনৈতিক সামাজিক সংশোধন রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন। একটি পরিবারে তার সামাজিকীকরন যদি ভাল হয়, তাহলে তার পরিবারের সামাজিকীকরনটাই ভাল হবে, কারন হলো ভাল থেকে ভালোর দিকে প্রভাবিত হয়, খারাপ থেকে ভালোর দিকে প্রভাবিত করা যায় না, তেমনি একটি রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে যদি ভালোর দিকে প্রভাবিত হয় তাহলে রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের অনেক সংশোধন আসবে পরবর্তীতে সংস্কৃতির ও পরিবর্তন আসবে, সব কিছু সম্ভাব হলো ভালো সামাজিকীকরনের মাধ্যম।
রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের গুরুত্বঃ সামাজিকীকরন প্রক্রিয়া একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই একজন মানুষ পুরোপুরি সামাজিক মানুষে পরিনত হয়। তাই সমাজ জীবনে সামাজিকীকরনের গুরুত্ব অপরিসীম। রাজনৈতিক সামাজিকীকরন ব্যতীত সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমে জনসাধারনের মধ্যে একটা ঝোঁক বা প্রবনতা পরিলক্ষিত হয়। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমে এই প্রবনতা পুরুষানুক্রমে প্রবাহিত হতে থাকে। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের ফলে প্রচলিত রাজনৈতিক, সংস্কৃতিক নিরবিচ্ছন্নতা বজায় থাকে এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নিরাপদ হয়। রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বে রাজনৈতিক দল ও স্বার্থন্বেষীগোষ্ঠীও রয়েছে। যারা রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনের মাধ্যমে সমকালীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরবর্তী প্রজম্মের মধ্যে প্রবিষ্ট হয়। রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে কখনো এক বা দুই দলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে সামাজিকীকরন পুর্নভাবে বিকশিত হতে পারে না বরং সকল দলের সমান অংশগ্রহনই রাজনৈতিক সামাজিকীকরন প্রক্রিয়াকে পুর্নভাবে বিকশিত করে। আর এই সামাজিকীকরন প্রক্রিয়া হয় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়। সামাজিকীকরনে রাজনৈতিক সংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যেও সামঞ্জস্যের ওপর মতৈক্য নির্ভরশীল। রাজনৈতিক সংস্কৃতির সামঞ্জস্যতা মতৈক্যকে সুদৃঢ় করে।
সুতরাং, উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি সামাজিকীকরনে রাজনীতি এবং রাজনীতিতে সামাজিকীকরন গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। এবং সামাজিকীকরনে রাজনীতির প্রভাব ও গুরুত্ব অপরিসীম।
উপসংহারঃ উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সামাজিকীকরন একটা বহুল আলোচিত বিষয়ের মধ্যে একটা। এটি আধুনিকীকরনের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার স্বরূপ।রাজনৈতিক সামাজিকীকরন ছাড়া কোন ব্যক্তির ব্যাক্তিত্ব যেমন বিকশিত হয় না তেমনি রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডও ব্যাহত হয়। জীবনের শৈশব থেকে শুরু করে কৈশর ও বাস্তব জীবনের সকল ক্ষেত্রে সামাজিকীকরনের একটি প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। রাজনৈতিক সামাজিকীকরন রাষ্ট্রের অবনিত থেকে রাষ্ট্রকে উন্নত পযায়ে পৌছে দিতে বলিষ্ঠভাবে সাহায্য করে।এটি ছাড়া ব্যাক্তি যেমন অচল তেমনি রাষ্ট্র ব্যাবস্থাও তার পরিপুর্ন কোঠায় পৌছাতে সক্ষম হয় না। বাংলাদেশের মতে গনতান্ত্রিক দেশে পরিবার এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ভূমিকা অপরিমেয়। আমাদের অশিক্ষিত জনগনের রাজনৈতিক সামাজিকীকরনে সঙ্গী দল সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। রাজনৈতি সামাজিকীকরন একটি নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। এ প্রসঙ্গে Alan R. Ball বলেন।।Political socialization is not a process continued to impressionable years of childhood, but one that continues throughout adult like.
তথ্যসূত্রঃ
১। ড. মোঃ মকসুদুর রহমান, রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব
২। R.C. Agarwal, political theory (Principles of political seience)
৩। নবম- দশম শ্রেনীর বোর্ড বই, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়।
৪। ইন্টারনেট
                                                                                                                                                                                                                             












No comments:

Post a Comment