সূচীপত্র
১। ভূমিকা
২। মন্টেস্কুর সংক্ষিপ্ত জীবনী
৩। মন্টেস্কুর রচনাবলী
৪। মন্টেস্কুর অনুসৃত পদ্ধতি
৫। মন্টেস্কুর আইন
৬। মন্টেস্কুর স্বাধীনতা
৭। মন্টেস্কুর সরকারের শ্রেনীবিভাগ
৮। প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্টেস্কু
৯। সমাজের উপর জলবায়ু ও পরিপাশ্বিক অবস্থার প্রভাব
১০। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির পেক্ষাপট
১১। মন্টেস্কুর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি
১২। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন ও নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ভারসাম্য
বিধানের নীতি
১৩। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির সমালোচনা
১৪। উপসংহার
১৫। তথ্য নির্র্দেশিকা
ভূমিকাঃ
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার একজন মহান
দার্শনিক। গৌরবময় বিপ্লব এর পর তিনি আগমন করেন। অষ্টাদশ শতকের শ্রেষ্ঠ দার্শনিকদের
মধ্যে মন্টেস্কু অন্যতম। তার মৌলিক চিন্তা চেতনা ও যুক্তির কারনে বিশেষ স্থান দখল
করে আছেন। মন্টেস্কু অল্প বয়সেই রাজনীতিক ও সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন। এবং
সকলভাকে ফ্রান্সের রাজনীতি সম্পর্কে অবহিত হন। তিনি রাজনীতিক সমস্যাগুলেো তুলে
ধরেন। রাজনীতির কাজ, আইন, ক্ষমতা,স্বাধীনতা ও ক্ষমতার বিভাজন করে চিরস্মরনীয় হয়ে
আছেন। তিনি স্বাধীনতা ও ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির প্রতি গুরুত্বপূর্ন ব্যাখ্যা
প্রদান করেছেন। তার স্বাধীন সম্পর্কে ধারনা এতটাই তাৎপর্যপুর্ন যে বৃটেন ও
আমেরিকার সংবিধানে লিখিত। এ জন্য ঐতিহাসিক দার্শনিক হিসাবে অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষন ও
যুক্তি তার স্থানকে অটুট রাখতে সক্ষম হয়েছে।
মন্টেস্কুর জীবনীঃ
১৬৮৯ সালে ফ্রান্সের
রাজধানী প্যারিসের অদুরে লা ব্রিডি নামক স্থানে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে মন্টেস্কু
(চার্লস লুইস সেকন্দাত) জন্ম গ্রহন করেন। মায়ের জমিদারির সুত্রে তিনি অনেক
সম্পত্তির মালিক হন। সাত বছর বয়সে মা মারা যাওয়ার পূর্বে লা ব্রিডেরজমিদার তার
নামে উইল করে দিয়ে যান। এগার বছর বয়সে মন্টেস্কু প্যারিসের যে বিদ্যালয় ভর্তি হয়ে
ছিলেন , সেখানে তিনি ক্লাসিক্যল বিষয় সমুহে জ্ঞান অর্জন করেন এবং স্টোয়িক
দার্শনিকদের চিন্তাধারা দ্বারা প্রভাহিত হন। ১৭১৬ সালে মন্টেস্কু তার চাচার শর্ত
সাপেক্ষে তার বিশাল সম্পত্তি চার্লসকে দান করে যান। শর্ত অনুযায়ী তিনি ব্যারন ডি
মন্টেস্কু নাম ধারন করেন। ১৭১৮ সালে মন্টেস্কু এক ধনবান মহিলার সাথে বিবাহবন্ধনে
আবদ্ধ হন। ১৭১৬ সালে তিনি উত্তরাধিকার সুত্রে লা ব্রিডি পার্লামেন্টের
প্রেসিডেন্টের পদ লাভ করেন। তিনি ছিলেন অতিরিক্ত ভ্রমন বিলাসী তাই দশ বছর প্রেসিডেন্টের
পদে অধিষ্ঠিত থাকার পর তা বিক্রি করে জ্ঞানার্জনের জন্য প্যারিসে ১৭২৮ সালে তিনি
প্যারিসের ঐতিহাসিক সাহিত্যসভা একাডেমির সদস্য নির্বাচিত হন। সমকালীন রাজনীতি ও
সাহিত্যের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট থাকায় তিনি ফ্রান্সের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক
ব্যবস্থা সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। তৎকালীন ফ্যান্সের বুদ্ধিবাদী
আন্দোলনের প্রতি তার বেশ সহানুভূতি ছিল। ইউরোপীয় সভ্যতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মন্টেস্কু
১৭২৮ সালে অস্টিয়া, হাঙ্গেরি, জার্মানি ও সুজারল্যান্ড ভ্রমন করে ১৭২৯ সালের শেষ
নাগাদ ইংল্যান্ডে পৌছান এবং দুই বছর সেখানে অবস্থান করেন। ইংল্যান্ডে অবস্থান কালে
তিনি ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকদের সংস্পর্শে আসেন এবং ব্রিটিশ রাজনৈতিক
ব্যবস্থা পর্যবেক্ষন করেন ও তিনি ব্রিটিশ স্বাধীনতা ও শৃঙ্খলাবোধের সমন্বয়ে গঠিত
ব্রিটিশ রাজনৈতিক বিধান দেখে অভিভূক্ত হয়ে পড়েছিলেন। সম্ভাবত এই কারনেই তিনি তার Spirit of Laws গ্রন্থের একটা অধ্যায় শুধুমাত্র ইংরেজ শাসনতন্ত্রের প্রশংসা
করে ব্যায় করেছেন। বিদেশ ভ্রমন শেষে মন্টেস্কু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন এবং লা
ব্রিডিতে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৭৫৫ সালে মন্টেস্কু মৃত্যবরন করেন।
মন্টেস্কুর রচনাবলীঃ
মন্টেস্কু যেসব গ্রন্থ
লিখেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটা গ্রন্থ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল।
১। The Persian Letters: "The
Persian Letters"
গ্রন্থটি মন্টেস্কুর ৩২ বছর বয়সে লেখা যা ১৭২১ সালে প্রকাশিত হয়। এই পুস্তকটি
ব্যাঙ্গাত্নক পুস্তক হিসেবে পরিচিত। এই পুস্তকে তৎকালিন সময়ের অর্থ-সামাজিক
রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ত্রুটিগুলো তুলে ধরেন। ধারনা করা হয় যে , ফ্রান্সে
পরিভ্রমনরত দুইজন পারসিয়ান ফ্রান্সের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় যঅবস্থা সম্পর্কে
তাদের বন্ধুদেরকে যে সকল চিঠি লিখছিলেন, সে সকল নাম বিহীন চিঠি গুলোকে মন্টেস্কু
সংকলিত করে "The
Persian Letters"নাম
দিয়ে পুস্তক আকারে প্রকাশ করেন।
২। Reflections on the causes of the
Greatnen and Decline of the Romons:
এই গ্রন্থে তিনি রোমের উত্থান পতনের কারন বিশ্লেষন করে দেখিয়েছেন। যে কোন ঘটনার
কার্যকারন অনুসন্ধান করতে হলে ঐতিহাসিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এই গ্রন্থটি
প্রকাশিত হয় ১৭৩৪ সালে।
৩। The Spirit
of Laws: মন্টেস্কুর এই বইটা ছিলো উনিশ বছরের
পরিশ্রমের ফসল। এটিই মন্টেস্কুর সর্বাধিক জনপ্রিয় ও সমালোচিত গ্রন্থ। তার এই
গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৭৪৮ সালে। এই গ্রন্থে তিনি আইন, স্বাধীনতা এবং ক্ষমতা
স্বতন্ত্রীকরন নীতি সম্পর্কে গঠন মূলক আলোচনা করেন। এছাড়াও রাষ্ট্র ও সমাজের উপর
পরিবেশ এর প্রভাব ,বানিজ্য্য,অর্থনীতি,ধর্ম, রোমান ও সামন্ত আইনের ইতিহাস ইত্যাদি
বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
মন্টেস্কুর অনুসৃত পদ্ধতিঃ
মন্টেস্কুর লিখিত বিভিন্ন
গ্রহন্থের উপর নজর দিলেই তার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। নিম্নে সে
সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১। অভিজ্ঞতামূলক পদ্ধতিঃ
মন্টেস্কু বলেন, তিনি কোনা সয়ষ্কার থেকে সিদ্ধান্ত নেন না, বরং বিভিন্ন ঘটনা ও
পরিস্থিাতর চারত্র ও প্রকৃতি থেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। অর্থাৎ তিনি
অভিজ্ঞতামূলক পদ্ধতির সাহায্যে রাষ্ট্রচিন্তা কে বিশ্লেষন করেছেন।
২। পর্যবেক্ষনমূলক পদ্ধতিঃ
প্রফেসর ডানিং বলেছেন, “মন্টেস্কু ইতিহাস থেকে এবং পর্যবেক্ষন দ্বারা প্রাপ্ত
তথ্যাদির ভিত্তিতেই সামাজিক বিষয়াদি এবং সেগুলো নিয়ন্ত্রনকারী বিভিন্ন আইনের
ব্যাখ্যা দিয়েছেন”।
৩। তুলনামূলক পদ্ধতিঃ
বিভিন্ন দেশে ভ্রমনের সুবাদে মন্টেস্কু রাজনৈতিক ব্যবস্থা অধ্যয়নের ক্ষেত্রে তুলনা
মূলক পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তিনি বিভিন্ন জাতির মধ্যে তুলনা করেছেন।
৪। যুক্তিবাদী পদ্ধতিঃ
মন্টেস্কু অভিজ্ঞতাবাদের উপরই তার যুক্তিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
৫। অবরোহ ও আরোহ পদ্ধতির
সমন্বয়ঃ মন্টেস্কু যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন সে সকল বিষয় অনুসন্ধান করতে
গিয়ে তিনি সুধু অবরোহ ও আরোহ পদ্ধতির উপর নির্ভর না হয়ে অবরোহ ও আরোহ পদ্ধতির
সংমিশ্রন ঘটিয়েছেন।
৬। বক্তব্যের ধারাবাহিকতাঃ
মন্টেস্কু তার বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে কখনোই একটি
বিষয়ের আলোচনা অসম্পন্ন রেখে অন্য বিষয়ের করেন নাই।
আইন সম্পর্কে মন্টেস্কুর
ধারনাঃ
মন্টেস্কু তার ‘The Spirit
of Laws’ গ্রন্থটি শরুই করেছেন আইনের সংজ্ঞা
প্রদানের মাধ্যমে। তিনি বলেছেন যে, বস্তর প্রকৃতি থেকে উদ্ভূত প্রয়োজনীয় সম্পর্কই
আইন। মন্টেস্কু বলেন, প্রতিটা জিনিসেরই নিজস্ব ধর্ম আছে। যেমন আগুনের ধর্ম
সবকিছুকে দহন করা, পানির ধর্ম নিচের দিকে প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি। এই অর্থে প্রতিটা
জীব ও জরবস্তুর নিজস্ব কতগুলো ধর্ম বা আইন আছে। অর্থাৎ পশুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে
ধর্ম বা আইন তা হচ্ছে পাশবিক আইন। আর মানুষ যে ধর্ম বা আইন মেনে চলে তা হচ্ছে
মানবিক আইন। মন্টেস্কুর মতে, মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষ বুদ্ধিমান ও বিবেক
সম্পন্ন। কিন্তু প্রাক রাষ্ট্রীয় যুগে মানুষ ছিল ভীরু,আতম্কগ্রস্ত। যদিও তখন তারা প্রাকৃতিক
আইন মেনে চলতো। কিন্তু কালক্রমে সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলো, মানুষের জ্ঞান, চিন্তাশক্তি
বৃদ্ধিপেল। ফলে মানুষ পরস্পেরের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় তৎপর হয়ে পড়লো এবং মানুষে
মানুষে এই সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য মানুষ্য
সৃষ্টি আইনের উদ্ভব ঘটে।
মন্টেস্কু তিন ধরনের আইনের
কথা বলেন। যথা:
আইন
(১)আন্তর্জাতিক আইন
(২) রাজনৈতিক আইন
(৩) সামাজিক আইন
১। আন্তর্জাতিক আইনঃ
বিশ্বে প্রতিটা রাষ্ট্র বা জাতির মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য যে নিয়ম নীতির
উদ্ভব ঘটেছে তাই হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইন (Law of nations)।
এই আইন
সকল সমাজের জন্য সমভাবে প্রযোয্য। এই আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজ রাষ্ট্রের স্বার্থ
বিঘ্নিত না করে অন্যান্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কল্যান সাধন করা এবং যুদ্ধকালে কম
ক্ষতি সাধন করা।
২। রাজনৈতিক আইনঃ যে আইনের
দ্বারা শাষক ও শাষিতের সম্পর্ক নির্ধারিত হয় তাই রাজনৈতিক আইন (political law) এই আইনের মাধ্যমেই নির্ধারিত হয় শাষক কিভাবে এবং কতটুকু
শাষিতের অধিকার সংরক্ষন করবে।
৩। সামাজিক আইনঃ যেসব
নিয়ম-নীতির আওতায় মানুষ সমাজবদ্ধ ঝীবন-যাপন করে এবং নিজেদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায়
রাখে তাই সামাজিক আইন। আন্তর্জাতিক আইন সকল জাতির জন্য সমভাবে প্রয়োজ্যহলেও
রাজনৈতিক ও সামাজিক আইন দেশ ভেদে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কেননা, বিভিন্ন রকম
রাষ্ট্রের আবহাওয়া,লোক সংখ্যা, মানুষের মানসিকতা, ধর্ম, নৈতিকতা, শিষ্টাচার
প্রভৃতি বিভিন্ন রকম। তাই মন্টেস্কু মনে করেন, পরিবর্তনশীল পৃথিবীর সাথে সাথে
সামাজিক ও রাজনৈতিক আইন ও পরিবর্তিত ও সংশোধিত হবে।
স্বাধীনতা সম্পর্কে
মন্টেস্কুর ধারনাঃ
Spirit of
Laws গ্রন্থের একাদশ, পঞ্চদশ ষোড়শ ও
সপ্তদশ পরিচ্ছেদে স্বাধীনতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। স্বাধীনতা
সম্পর্কে মন্টেস্কুর অভিমত এতটাই তাৎপর্যপূর্ন যে, পরবর্তীকালে বৃটেন ও আমেরিকা
তাদের সমংবিধানে স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন বিষয় হিসেবে
লিপিবদ্ধ
করেছেন। মন্টেস্কুর মতে “শান্তিই প্রথম স্বাভাবিক আইন” সুতরাং সরকারের মূল নীতিই
হচ্ছে নিরাপত্তার নীতি। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু জান মালের নিরাপত্তাকেই
বোঝানো হয়নি, বরং মানুষের সার্বিক স্বাধীনতা সংরক্ষন করাই রাষ্ট্রের প্রধান
উদ্দেশ্য। সাধারন ভাবে নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার অধিকারকেই স্বাধীনতা বলে।
কিন্তু মন্টেস্কু মনে করেন, এই সংঙ্গা স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর মাত্র এবং
প্রকৃতির রাজ্যের নিয়ন্ত্রনহীন স্বাধীনতার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই মন্টেস্কু বলেন
সমাজ ও রাষ্ট্রের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন আইনের নিয়ন্ত্রনে থেকে ব্যক্তি তার
ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য যে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে তাই স্বাধীনতা।
মন্টেস্কু স্বাধীনতাকে দুই
ভাগে ভাগ করেছেনঃ যথা-
স্বাধীনতা
(১)রাজনৈতিক স্বাধীনতা (political liebrty) (২) নাগরিক স্বাধীনতা (civil liebrty)
১। রাজনৈতিক স্বাধীনতাঃ
মন্টেস্কু রাষ্ট্র ও জনসাধারনের সাথে সম্পর্কযুক্ত করে রাজনৈতিক স্বাধীনতার
বিশ্লেষন করেছেন এবং রাষ্ট্র কতৃক স্বীকৃত আইনের আওতায়
নাগরিকদের সকল কিছু করার অধিকারকেই রাজনৈতিক স্বাধীনতা বুঝিয়েছেন। কোন ব্যক্তি বা
গোষ্ঠী আইনের উর্দ্ধে অবস্থান করতে পারে না । আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত
শাষনব্যবস্থা, ক্ষমতার সুষ্ঠু ব্যবহার এবং সরকারের সংযমশীলতার মধ্যেই রাজনৈতিক
স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিদ্যমান।
২। নাগরিক স্বাধীনতাঃ
নাগরিক সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতেই সৃষ্টি হয় নাগরিক স্বাধীনতা। আর
এই স্বাধীনতা দাসপ্রথার সম্পেূর্ন বিপরীত অবস্থা। রাজনৈতিক স্বাধীনতার সাথে
সংবিধানের সম্পর্কটা অত্যাবশ্যক। কিন্তু ব্যক্তিগত স্বাধীনতার জন্য সংবিধানের তেমন
কোন প্রয়োজন নেই। ব্যক্তির আচার আচারন ইত্যাদির উপর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নির্ভর
করে। মন্টেস্কুর মতে, কোন শক্তির প্রতি বল পূর্বক অনগত্য নয় বরং যথার্থ আইনের
প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের মাধ্যমেই মানুষ পূর্নাঙ্গ স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারে।
তিনি নাগরিক স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করার সাথে সরকারের ক্ষমতা সীমিতকরনের কথা বলেন।
সরকারের শ্রেনীবিভাগঃ
মন্টেস্কু সরকারকে প্রধানত
তিন শ্রেনীতে বিভক্ত করেছেন, যথাঃ প্রজাতন্ত্র, রাজতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র। কিন্তু
প্রজাতন্ত্রকে তিনি আবার গনতন্ত্র ও অভিজ্ঞতন্ত্র বলে যে
দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন সেদিক দিয়ে যদি বিবেচনা করা যায় তাহলে তার শ্রেনিবিভাগের
সংখ্যা দাঁড়ায় চারটি, যথাঃ রাজতন্ত্র,ভিজাততন্ত্র, গনতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র।
মন্টেস্কু তার সরকারের শ্রেনীবিভাগে যে দুটি জিনিসকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহন করেছেন
সে দুটি জিনিস হলো প্রকৃতি (Nature) ও নীতি (Principle)।প্রকৃতির উপাদান অনুসারে সরকারের কাঠামো নির্ধারিত হয় কিন্তু
তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্র ও লখ্য নির্ধারিত হয় নীতির উপাদান অনুসারে। মন্টেস্কুর
মতে প্রকৃতির উপাদান প্রয়োগে সরকারের যে শ্রেনীবিভাগ নির্ধারিত হয় তার মধ্যে কোন
যুক্তি নেই বা কোন অভিনবত্ব নেই। সেই কারনে সরকারের শ্রেনীবিন্যাসের ব্যাপারে তিনি
প্রকৃতি ও নীতি উভয় উপাদানই প্রয়োগ করেছেন। যদিও তার কাছে প্রকৃতির উপাদান অপেক্ষা
নীতির উপাদান অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ন।প্রকৃতির দিক দিয়ে সরকারের কাঠামো হচ্ছে
নিম্নসরুপঃ
১। প্রজাতন্ত্রঃ এই
সরকারের সার্বভৌম ক্ষমতা জনসাধারনের হাতে ন্যস্ত থাকে। রাষ্ট্রের সমগ্র জনগন যখন এ
ক্ষমতা লাভ করে তখন তা হয় গনতন্ত্র এবং যখন তা অংশবিশেষের হাতে অর্থাৎ
জনপ্রতিনিধিদের হাতে ন্যাস্ত থাকে তখন তাকে বলা হয় অভিজাততন্ত্র।
২। রাজতন্ত্রঃ এই সরকার
ব্যবস্থায় সার্ভভৌম ক্ষমতা একজনের হাতে ন্যস্ত থাকে এবং তিনি তা নির্ধারিত আইন
অনুসারে প্রয়োগ করে থাকেন।
৩।সৈরতন্ত্রঃ এই
শাসনব্যবস্থাতেও সার্ভসৌম ক্ষমতা একজনের হাতে ন্যস্ত থাকে, তবে তিনি তা নির্ধারিত
আইন অনুসারে প্রয়োগ না করে প্রয়োগ করেন নিজের খেয়াল খুশি মত।
মন্টেস্কুর মতে এসব সরকারের প্রত্যেকটির এক একটি
স্বতন্ত্র নীতিও রয়েছে, যথাঃ
১। প্রজাতন্ত্রঃ এই
সরকারের বিশেষ নীতি হচ্ছে তার রাজনৈতিক সদগুন।এই সদগুন সাধারনত দেশপ্রেম ও সাম্যানুরাগের
মাধ্যমে প্রকাশ লাভ করে। গনতন্ত্রে এই সদগুন মাত্রাতিরিক্ত পরিমানে বিরাজ করে।
কিন্তু অভিজাততন্ত্রে তার পরিমান হয় মাঝারি রকমের।
২। রাজতন্ত্রঃ এই সরকারের
বিশেষ নীতি হচ্ছে তার সাশন। এই শাসন প্রভাবশালী
প্রতিটি শ্রেনীর বা প্রতিটি ব্যক্তির অধিকার ও সুবিধাদির সুউচ্ছ অনুভূতির
মাধ্যমে প্রকাশ লাভ করে। প্রজাতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মানুষ সামর্থ্য ও
তেজস্বিতার যে পরিচয় দেয় তা সাম্যের অনুভূতি থেকে উৎসারিত হয়। কিন্তু রাজতন্ত্রে
তা উৎসারিত হয় বিশেষ সুবিধা ও আত্নমর্যাদা লাভের অনুভূতি থেকে।
৩। সৈরতন্ত্রঃ এই সরকারের
বিশেষ নীতি হচ্ছে ভীতি হীন (Fearless ) এই শাসন ব্যবস্থায় সদগুন বা সন্মানের কোন স্থান নেই। এখানে
শাসক সকল ক্ষমতা তার নিজের হাতে যুক্তিগত করে রাখেন এবং তার ক্ষমতার উপর আক্রমন
চালাবেন বলে যখন কাউকে সন্দেহ তখন তাকে চরম আঘাত প্রদান করেন।
প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা
সম্পর্কে মন্টেস্কুঃ
প্রতক্ষ গণতান্ত্রিক
ব্যবস্থার প্রতি মন্টেস্কু আস্থাবান ছিলেন না। কেননা তিনি মনে করতেন বেশিরভাগ
জনগনই রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মেধার অধিকারি নয়। তবে তিনি পরোক্ষ গণতন্ত্রের পক্ষপাতি
ছিলেন। আর এই পরোক্ষ গণতন্ত্রের সরকার
কাঠামোর গঠন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে মন্টেস্কু প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে তার
মতামত যুক্তি সহকারে উপাস্থাপন করেন।
১। সাধারন নাগরিক
২। অভিজাত শ্রেনীর লোক
মন্টেস্কু অভিজাত শ্রেনীর
লোকের জন্য বিশেষ পরিশোধ গঠনের প্রস্তাব দেন। নির্বাচন পদ্ধতির ব্যাপারে মন্টেস্কু
প্রচলিত নির্বাচন ব্যাবস্থার বিরোধিতা করেন। তার মতে নির্বাচন ব্যবস্থা হচ্ছে
“অঞ্চল ভিত্তিক নির্বাচন”।
সমাজের উপর জলবায়ু ও
পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রভাবঃ
মন্টেস্কুর
রাষ্ট্রতন্ত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তিনি মানুষের রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনে
জলবায়ু ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রভাবের উপর যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেছেন। চতুদর্শ
শতাব্দীর মুসলিম চিন্তাবিদ ইবনে খালদুন
ছাড়া আর কোন দার্শনিক এরুপ গুরুত্ব আরোপ করেননি। মন্টেস্কু বিশ্বাস করেন যে, কোন
দেশের সামাজিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানসমুহ সে দেশের অধিবাসীদের চারিত্রিক
বৈশিষ্ট্য গঠিত সেখানকার জলবায়ু পারিপাশ্বিক অবস্থা রীতিনীতি প্রভৃতি বল্হুবিদ
উপাদানের প্রভাবে।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন
নীতির প্রেক্ষাপটঃ
১৭২৯-৩১ সাল পযন্ত
মন্টেস্কু ইংলান্ডে অবস্থানকালে সেখানকার রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমূহ অত্যান্ত
সূক্ষভাবে পযবেক্ষন করেন এবং ইংল্যান্ডের নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট
হন। তাছাড়া ইংল্যান্ডের জনগনের সুশৃঙ্খল স্বাধীনতা উপভোগের প্রাচুয্য দেখে আকৃষ্ট
হন। অন্যদিকে তার মাতৃভূমি ফ্রান্স ছিলে এর বিপরীত স্বৈরচারী রাজাকতৃক জনগনকে শোষন
ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হরন মন্টেস্কুকে ব্যথিত করে। ইংল্যান্ডের জনগনের বিপুল
স্বাধীনতার উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে মন্টেস্কু দেখেন যে, সরকারের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা
গুলো পৃথক পৃথক সংস্থার উপর অর্পিত এবং সংস্থাগুলো পরস্পরের নিয়ন্ত্রনমুক্ত।
মন্টেস্কু ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির অনুপ্রেরনা লাভ করেন মূলত জনগনের কাছ থেকে।
তবে জনগন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিষয়টা এরিয়ে গেছেন। অন্যদিকে মন্টেস্কু
সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে বিচার বিভাগকে পৃথক গুরুত্বের সাথে দেখেছেন।জনগন তার
“Civil Government” গ্রন্থে সরকারের Executive ও Federative বিভাগ দুটিকে আইন বিভাগের কতৃত্বের কথা বলেন।
মন্টেস্কুর ক্ষমতা
স্বতন্ত্রীকরন নীতিঃ
মন্টেস্কু তার The Spirit of Laws গ্রন্থে সরকারের যাবতীয় কার্যাবলিকে তিনভাগে ভাগ করেছেন।
১। আইন বিভাগ
২। শাসন বিভাগ
৩। বিচার বিভাগ
১। আইন বিভাগঃ মন্টেস্কুর
মতে আইন বিভাগের কাজ হচ্ছে আইন তৈরি করা।
২। শাসন বিভাগঃ শাসন
বিভাগের কাজ হচ্ছে আইনের বাস্তবায়ন করা।
৩। বিচার বিভাগঃ বিচার
বিভাগের কাজ হচ্ছে আইনের ব্যাখ্যা প্রদান করা।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন ও
নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ভারসম্য বিধানের নীতিঃ
শাসন বিভাগ
আইন
বিভাগ
বিচার বিভাগ
রাষ্ট্রতত্ত্বের ইতিহাসে ফরাসি
মনীষী মন্টেস্কু প্রধানত তার ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি ও নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে
ভারসম্য বিধানের নীতির জন্য চিরস্মরনীয় হয়ে আছেন। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরনের
অভিব্যক্তি আমরা সর্বপ্রথম দেখতে পাই আধুনিক যুগের ইংরেজ দার্শনিক জন লকের মধ্যে।
কিন্তু জনলক এই তত্ত্বের বিস্তৃত ও বিজ্ঞানসম্মত কোন বিশ্লেষন প্রদান করেননি।
অষ্টাদশ শতাব্দীর ফরাসি দার্শনিক মন্টেস্কু এ তত্ত্বের বিস্তারিত ব্যখ্যা প্রদান
করেন। মন্টেস্কুর মতে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি অনুযায়ী সরকারের তিনটি বিভাগ
স্বাধীন ভাবে কাজ করবে। শূলত স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য মন্টেস্কু এই নীতির
ব্যখ্যা প্রদান করেন। কিন্তু ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরনই মন্টেস্কুর মূল উদ্দেশ্য ছিল
না। তার উদ্দেশ্য ছিল সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে ভারসম্যের সৃষ্টি করা। যাতে
এক বিভাগ অণ্য বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ না করতে পারে।
মন্টেস্কুর মতে,
১। সরকারের আইন বিভাগ,শাসন
বিভাগ ও বিচার বিভাগ আলাদা আলাদা কতিৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত হবে।
২। প্রতিটা বিভাগের ক্ষমতা
ও কাজ নির্দিষ্ট গন্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকবে তবে নিয়ন্ত্রনে ভারসাম্য নীতি অটুট থাকবে।
৩। প্রতিটা বিভাগ তাদের
নিজ এখতিয়ারে স্বাধীন ও চুড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী হবে।
৪। এক বিভাগ অন্য বিভাগের
উপর অযথা হস্থক্ষেপ করবে না।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন
নীতির সমালোচনাঃ
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটা প্রাচীন মতবাদ হলেও বাস্তবিকলি ক্ষমতার পূর্ন স্বতন্ত্রীকরন
অসম্ভব। তাই এই নীতির বেশ কিছু সমালোচনা রয়েছে। যা নিম্নে আলোচনা করা হলো
১। ক্ষমতার পূর্ন
স্বতন্ত্রকিরন নীতি সম্ভাব নয়, কাম্য ও নয়:
সরকারের ক্ষমতাকে তিনটি
বিভাগের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া বোস্তবিক পক্ষে সম্ভব নয়। ম্যাকাইভার বলেন এই নীতি
কঠোর রভাবে প্রয়োগ করা হলে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা ও অনৈক্যের
সৃষ্টি হবে।
২। অবাস্তব নীতিঃ এই নীতি
অবাস্তব নীতি হিসাবে ও সমালোচিত হয়েছে। কারন বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংবিধানে যেমন:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানেও এই নীতির উল্লেখ রয়েছে। তারপরও সেখানে check and balance কার্যকারী রয়েছে।
৩। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরনে
রাষ্ট্রনিষ্প্রান হয়ে পড়েঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি কার্যকার হয়ে পড়লে রাষ্ট্রের
মধ্যে বিভিন্ন প্রকার বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। যার ফলে রাষ্ট্র নিষ্প্রান হয়ে যেতে
পারে।
৪। রাষ্ট্রীয় ঐক্য
বাঁধাগ্রস্ত হয়ঃ এই নীতির ফলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন organ আলাদা আলাদা
ক্ষমতা বলে তাদের একতা হারিয়ে ফেলে।
৫। সংসদীয় ব্যবস্থায়
অসম্ভবঃ বিশ্বের যেসব রাষ্ট্রে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান সেসব রাষ্ট্রে এই
নীতি অসম্ভব, কারন এ সমস্থ রাষ্ট্রে একাধারে মুন্ত্রিগন আইনসভা ও শাসন বিভাগের
সদস্য।
৬। ফাইনারের অভিমতঃ এই
নীতি কুফল প্রসঙ্গে অধ্যাপক ফাইনার বলেন “পরিপূর্ন ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি
প্রয়োগ করলে সরকার কখনো মুর্ছা যাবে, কখনো ধনুষ্টংকার রোগীর মত হাত প ছুড়তে থাকবে।
আবার কখনো অমার হয়ে পড়বে।
৭। আইনবিভাগের গুরুত্ব
বৃদ্ধিঃ এই নীতি কার্যকার হলে রাষ্ট্রের আইন বিভাগের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। যা অন্য
বিভাগগুলোকে নিয়ন্ত্রন করে।
উপসংহারঃ
রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলোচনায়
যুক্তিবাদ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। যারা আধুনিক যুগের অন্যতম পদ্ধতির ব্যবহার করেছেন
মন্টেস্কু এদের মধ্যে অন্যতম। তিনি আধুনিক ধারা অব্যতি রেখে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে
সুক্ষভাবে তঃকালিন রাজনীতি ব্যাখ্যা করেছেন। মন্টেস্কুর দেওয়া আইন তত্ত্ব বর্তমান
সমাজে বিশেষ ভাবে পরিলক্ষিত হয়। গনতন্ত্রের অন্যতম ধারায় জনগনের যে অধিকার
পরিলক্ষিত হয় তা মন্টেস্কুর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি দ্বারা সরকারের প্রত্যেকটা
বিভাগের স্বাধীনতা দেওয়া বা জনগনের মৌলিক অধিকার বা স্বাধীনতা রক্ষা করা রুশোর পরই
মন্টেস্কিু অন্যতম দার্শনিক। আধুনিক
রাজনীতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছেন। মন্টেস্কুর তত্ত্ব বিশেষ করে ফ্রান্স,
যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ প্রভাব ফেলে। তার তত্ত্ব দ্বারা রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে অন্যতম
আসন দখল করেছেন। একমাত্র স্বাধীনতায় (Liberty) আলোড়ন
সৃষ্টিকারী মন্টেস্কু ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে।
তথ্য নির্দেশিকাঃ
১। পাশ্চাত্য
রাষ্ট্রচিন্তা
গফুরা নাসরিন ও এফ.এ.কবীর
২। রাষ্ট্রচিন্তা পরিচিতি
মুহাম্মাদ আয়েশ উদ্দীন
No comments:
Post a Comment